কাশ্মীর থেকেই শুরু হবে গাজওয়ায়ে হিন্দ -আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

আগস্ট ০৮ ২০১৯, ২০:০২

হাবীব আনওয়ার, হাটহাজারী প্রতিনিধি:

উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার কর্তৃক ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির মাধ্যমে কাশ্মীরের বিশেষ স্বাতন্ত্র ও মর্যাদা কেড়ে নেয়ার তীব্র নিন্দা ও কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও হাটহাজারী মাদরাসার সহকারী পরিচালক আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী।

৮ই আগস্ট বৃহস্পতিবার বাদ আসর হাটহাজারী ডাক বাংলো চত্ত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ হাটহাজারী উপজেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, ১৯৪৭ সালে জম্মু-কাশ্মীরকে ভারত সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সনদ এবং সংবিধানের ৩৭০ ধারা; যার মাধ্যমে তাদের একটা স্বতন্ত্র এবং স্বায়ত্বশাসন ছিল; হিন্দুত্ববাদি বিজেপি সরকার গায়ের জোরে অস্ত্রের মুখে এই সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে কাশ্মীরী মুসলমানদের সে অধিকার কেড়ে নিয়েছে।

১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের প্রস্তাবনায় স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, কাশ্মীরের জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই সেখানকার সমস্যার সমাধান করতে হবে। অথচ ভারত জাতিসংঘের এই প্রস্তাবকে লঙ্ঘন করে অস্ত্রের বলে পুরো কাশ্মীরকে জুলুমের রাজ্যে পরিণত করেছে।

অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরকে সাংবিধানিক বিশেষ মর্যাদা প্রদান সম্বলিত ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ এবং প্রশাসনিক বিভক্তিকরণের মাধ্যমে মোদি সরকার কাশ্মীরি জনগণের সাথে রাষ্ট্রীয় বিশ্বাসঘাতকতা ও প্রতারণা করেছে। মিখাইল গর্ভাচেভের আমলে যেভাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে খান খান হয়েছিল, মোদি সরকারের আমলে ভারতের সেই পরিণতি হতে যাচ্ছে। মোদি ভারতকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পরিণতির দিকেই ঠেলে দিচ্ছে। মোদির এ পদক্ষেপের কারণে কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে গাযওয়ায়ে হিন্দের চমৎকার অধ্যায় রচিত হবে।

আল্লামা বাবুনগরী বলেন, অনতিবিলম্বে কাশ্মীরের মুসলমানদেরকে ঘিরে সকল অন্যায় ও দমন-পীড়নমূলক পদক্ষেপ থেকে বিরত হয়ে কাশ্মীরী জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকনের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে এবং মুসলিম বিদ্বেষী প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। তিনি অবিলম্বে বিশিষ্ট ইসলামী সংগীতশিল্পী মাওলানা আলমগীর বিন কবির এবং তরুণ আলেম মুফতী সানাউল্লাহসহ কারাবন্দী সকল উলামায়ে কেরামের নিঃশর্ত মুক্তি দাবী করেন।

উক্ত প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন হাটহাজারী পৌরসভা হেফাজতের সম্মানিত সভাপতি মাওলানা মীর ইদ্রীস।

মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী ও মাওলানা এমরান সিকদারের যৌথ সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- হাটহাজারী মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস আল্লামা আহমদ দিদার কাসেমী, আল্লামা মুমতাজুল করিম বাবাহুজুর, মেখল মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক মুফতী মোহাম্মদ আলী, মাওলানা কাযী শফিউল্লাহ, মাওলানা জাহাঙ্গীর মেহেদী, মাওলানা মাহমুদুল হোসাইন, মাস্টার মোহাম্মদ আহসানুল্লাহ, মাওলানা আব্দুল মাবুদ, জনাব শফিউল আলম, জনাব নূর মোহাম্মদ, মাওলানা আব্দুর রহিম, মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা আসাদুল্লাহ, মাওলানা আব্দুল্লাহ বিন হাসান প্রমুখ।

প্রতিবাদ সভা শেষে বৃষ্টি উপেক্ষা করে হুইল চেয়ারে চড়ে আল্লামা বাবুনগরী সাহেব বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন। হাজার হাজার তাওহীদী জনতার অংশগ্রহণে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল হাটহাজারী বাজার, বাসস্টেশন, কলেজ গেইট প্রদক্ষিণ করে হাটহাজারী মাদরাসার সামনে এসে সমাপ্ত হয়।