কালুরঘাটে নতুন সেতু নির্মাণের দাবীতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

সেপ্টেম্বর ১৪ ২০২০, ১৮:৩০

মোহাম্মদ জিপন উদ্দিন, চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের উদ্যোগে কালুরঘাট নতুন সেতু নির্মাণের দাবীতে সোমবার (১৪ই সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় নাগরিক ফোরামের মহাসচিব মো. কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহা মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারক লিপি প্রদান করা হয়।

উক্ত স্মারক লিপি প্রদান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, এডভোকেট মাসুদুল আলম বাবলু, এডভোকেট সেলিম চৌধুরী, আকরাম হোসেন, জসিম উদ্দিন, লাভলী ডিও, মো: আলী, মো: রাকিব, মুরাদ হোসেন বিপ্লব,রোটারিয়ান মোঃ ইমতিয়াজ আহমেদ এসিএ প্রমুখ।
স্মারকলিপি গ্রহণকালে অতিরিক্ত (ভারপ্রাপ্ত) বিভাগীয় কমিশনার শংকর রঞ্জন সাহা চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের নেতৃবৃন্দদেরকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আপনাদের স্মারকলিপি যথাসময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রেরণ করা হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশের উন্নয়নে যথেষ্ট আন্তরিক। আমি বিশ্বাস করি আপনাদের দাবীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কালুরঘাটের দ্বিতীয় সেতু নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উক্ত স্মারক লিপিতে চট্টগ্রাম কর্ণফুলী নদীতে কালুরঘাট রেল সংযুক্ত যানবাহন চলাচলের নতুন সেতু নির্মাণ ও বাস্তবায়নের দাবী জানানো হয়।
নাগরিক ফোরামের কর্মকর্তারা স্মারক লিপিতে আরও উল্লেখ করেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসী তথা কক্সবাজার, বান্দরবনসহ বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর বৃহত্তর স্বার্থে কর্ণফুলী নদীতে কালুরঘাটে দ্বিতীয় রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণ ও বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। বর্তমানে এই সেতুর বয়স ৯০ বছর অতিবাহিত হয়েছে এবং সেতুটি এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। অনেকে আগেই বিশেষজ্ঞ দল এই সেতু চলাচল অনুপোযোগী হিসেবে ঘোষনা দিলেও প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। যে কোন মূহুর্তে এই সেতুতে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। সবকিছু বিবেচনা করে কালুরঘাটে দ্বিতীয় সেতু দাবীতে আমরা ৮৮ সালে বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি প্রতিষ্ঠার পর কমিটির মাধ্যমে এবং অন্যান্য সুশিল সমাজ তাদের নিজেস্ব সংগঠনের মাধ্যমে ও চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের উদ্যোগে ফোরামের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। বিশেষ করে একাধিক সভা-সেমিনার-মানববন্ধনের মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করা হয়। আমাদের বাংলাদেশে প্রধামন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে বৃহত্তম পদ্মা সেতুসহ অসংখ্য বড় বড় সেতু নির্মিত হয়েছে বা হচ্ছে। কিন্তু কর্ণফুলী নদীতে কালুরঘাটে একটি রেল কাম সড়ক সেতু নির্মিত করার কথা থাকলেও অদ্যবদী সরকারের পক্ষ হতে কোন ধরনের সেতু নির্মাণের গঠন মূলক পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নাই। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেল যোগাযোগের কার্যক্রম অগ্রগতি হলেও রেল চলাচলের পূর্বের জরাজীর্ণ সেতু ব্যতীত নতুনভাবে সেতু নির্মাণের কোনধরনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। প্রয়াত মাননীয় সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন খান বাদলের স্বপ্নছিল, কালুরঘাটের দ্বিতীয় সেতু নির্মাণ করা। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান মাননীয় সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমেদ বোয়ালখালীবাসী তথা চাঁন্দগাও পাঁচলাইশ এলাকার জনসাধারনকে কালুরঘাট সেতুর নির্মিত করার প্রতিস্রুতি দিয়েছেন। কালুরঘাট দ্বিতীয় সেতু শুধুমাত্র সাধারণ মানুষ যাতায়াতের জন্য নয়। দক্ষিণ চট্টগ্রাম তথা বোয়ালখালীতে অসংখ্য শিল্প কলকারখানা প্রতিষ্ঠা হয়েছে। অন্যদিকে সরকার কর্তৃক নির্মিত কর্ণফুলী টানেল পুন:রায় চালু হয়ে গেলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম পুরটাই শিল্প নগরী ও আবাসিক মডেল টাউনে পরিণত হবে। যার দরুণ কালুরঘাটে দ্বিতীয় সেতু নির্মাণ করা সময় উপযোগী বলে ফোরাম দাবী করে।
এই জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে প্রতিদিন ঝুকি নিয়ে যেমনি রেল এবং যানবাহন চলাচল করে তেমনি সেতুটি একমুখি হওয়া ঘন্টার পর ঘন্টা সেতু পারাপারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এই অপেক্ষমান অবস্থান এই সেতুর উপরে অসংখ্য রোগী মৃত্যুবরণ করেছে এবং চাকরীজিবী ও শিক্ষপ্রতিষ্ঠানগামী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে পারে না। প্রায় সময় সেতুতে মেরাথন যানজট লেগে থাকে। অন্যদিকে সেতুটি মেরামতের কথা বলে কিছুদিন পর পর রাতের বেলায় বন্ধ রাখলেও কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়না। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সেতু মেরামতের জন্য বড় অংকের বাজেট দিলেও বাজেটের পর্যাপ্ত পরিমান কাজ হয় নাই। মেরামত কাজেও দূর্নীতি রয়েছে পাশাপাশি ভারি যানবাহন চলাচল নিষেধ থাকলেও সেতুর ইজারাদারেরা বড় অংকের টুল আদায়ের মাধ্যমে অতিরিক্ত মালামাল বোঝাইকৃত ভারি যানবাহন চলাচলের সুযোগ করে দিচ্ছে। যার দরুন যে কোন সময় যে কোন মূহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।