কাতিব টিভির ইসলামি রিয়েলিটি শো ‘রমজানের পরশ’ সম্পন্ন

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

এপ্রিল ৩০ ২০২২, ০৪:৫০

জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল কাতিব টিভির পবিত্র রমযানুল মুবারক উপলক্ষে আয়োজিত কুরআন তিলাওয়াত ও নাশিদ বিষয়ক ইসলামি রিয়েলিটি শো ‘রমজানের পরশ-২০২২’এর গ্রান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কুরআন তিলাওয়াত বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন, সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ আয়শা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা তাহফিজুল কুরআন মাদরাসার শিক্ষার্থী হাফিজ মাসউদ আহমদ, ১ম রানার্স আপ হয়েছেন সিলেট জামেয়া ইসলামিয়া ফরিদাবাদের শিক্ষার্থী হাফিজ আবু রাফে, ২য় রানার্স আপ হয়েছেন সিলেট জামিয়া ইসলামিয়া শামিমাবাদের শিক্ষার্থী আহমদ হানজালা, ৪র্থ স্থানে উর্ত্তীণ হয়েছে দারুল আরকাম সিলেটের শিক্ষার্থী হাফিজ শোয়াইবুর রহমান।

নাশিদ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কক্সবাজার জেলার প্রতিযোগী বায়তুশ শরফ মাদরাসার শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান আজাদ , ১ম রানার্স আপ মৌলভীবাজারের দি ফ্লাওয়ারস কেজি এন্ড হাইস্কুলের শিক্ষার্থী ইমাদ আহমদ জাহান, ২য় রানার্স আপ সিলেট জামিয়া তালীমুল কুরআনের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম। ৪র্থ স্থানে উর্ত্তীণ হয়েছে বি-বাড়িয়ার প্রতিযোগী এনাম বিন সাঈদ।

(২৯ এপ্রিল) শুক্রবার রাত ১০টায় সিলেট নগরীর হোটেল মেট্রো ইন্টারন্যাশনালে রমজানের পরশের গ্রান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হয়। এতে অতিথি হিসেবে ছিলেন, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ সভাপতি ও জামিয়া হোসাইনিয়া গহরপুরের মুহতামিম মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন আহমদ গহরপুরী, মাওলানা রফিকুল ইসলাম জাকারিয়া, মাওলানা মঈনুল হক চৌধুরী, জয়নাল আবেদীন, মাওলানা আবদুল ওয়াদুদ, সালাহ উদ্দিন আলভি ও জামিয়া হোসাইনিয়া গহরপুরের শিক্ষক মুফতি মুহাম্মাদ রাইহান, মিডিয়াব্যক্তিত্ব সুফিয়ান বিন এনাম।

পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে মীম সুফিয়ানের উপস্থাপনায় কুরআন তিলাওয়াত বিভাগের বিচারক ছিলেন তাহফিজুল কুরআন ওয়াস সুন্নাহ সিলেট শাখার পরিচালক হাফিজ মাওলানা ওয়ালীউর রহমান খান ও হাফিজ আব্দুল্লাহ খান। নাশিদ বিভাগের নিয়মিত বিচারক ছিলেন, জনপ্রিয় সুফীশিল্পী শালিন আহমদ অতিথি বিচারক ছিলেন, গীতিকার সুরকার মুজাহিদ বুলবুল, মাশকুর এলাহি, সাকিব আশরাফ ও আলী মরতুজা।

কুরআন তিলাওয়াত বিভাগের চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন সিলেট জেলার প্রতিযোগী পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক হাফিজ মাওলানা দেলোয়ার হোসাইনের সৌজন্যে নগদ ১০,০০০/- (দশ হাজার টাকা মাত্র)। ১ম রানার্সআপ পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন ইত্তিহাদ কম্পিউটারের সৌজন্যে নগদ ৭,০০০/- (সাত হাজার টাকা মাত্র)। ২য় রানার্স আপ পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন শহীদ আহমদ চৌধুরী রুনুর সৌজন্যে নগদ ৫,০০০/- (৫ হাজার টাকা মাত্র)। ৩য় রানার্স আপ পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন সেইফ কালেকশনের সৌজন্যে আকর্ষণীয় গিফট হ্যাম্পার।

নাশিদ বিভাগের চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কক্সবাজার জেলার প্রতিযোগী পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন বরুনা মাদরাসার সদরে মুহতামিম মাওলানা শেখ নুরে আলম হামিদীর সৌজন্যে নগদ ১০,০০০/- (দশ হাজার টাকা মাত্র)। ১ম রানার্স আপ পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন হাফিজ আবুবকর আল হাদীর সৌজন্যে নগদ ৭,০০০/- (সাত হাজার টাকা মাত্র)। ২য় রানার্স আপ পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন টাঙ্গাইল বুক বাইন্ডিংয়ের আবদুল মান্নানের সৌজন্যে নগদ ৫,০০০/- (পাঁচ হাজার টাকা মাত্র)। ৩য় রানার্স আপ পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন সেইফ কালেকশানের সৌজন্যে আকর্ষণীয় গিফট হ্যাম্পার।

রমজানের পরশ অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়েছিলে যেভাবে; ১ম রমযান থেকে ২৫ রমজান পর্যন্ত ভিন্ন ভিন্ন ২৫টি জীবনঘনিষ্ঠ বিষয় দিয়ে সাজানো ছিলো অনুষ্ঠানটি। মূলত এটা প্রোগ্রামের ব্যতিক্রমি দিক। প্রতিদিন ছিলো একজন প্রতিযোগীর কুরআন তিলাওয়াত ও একজন প্রতিযোগীর নাশিদ। প্রতিদিন নির্ধারিত বিষয়ে আলোচনা উপস্থাপন করেন তরুণ একজন আলোচক। দুই প্রতিযোগীর পরিবেশনা ও আলোচকের বিষয় ছিল একই। প্রতিযোগীদের প্রায় প্রত্যেকেই ছিলো মিডিয়ার জগতে সম্পূর্ণ নবীন ও শিক্ষানবীশ। আলোচকদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন, অনলাইন জগতের তুলনামূলক কম পরিচিত অথচ যোগ্যতম একেকজন তরুণ। যা ছিলো ‘রমজানের পরশ‘র অত্যান্ত প্রসংশনীয় দিক।

‘রমজানের পরশ’ শুরু বিষয়ে কাতিব টিভির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ইনাম বিন সিদ্দিক বলেছেন, কাতিব টিভি বৈশ্বিক মহামারী মরণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে নিয়মিত প্রোগ্রাম ‘রমজানের আলো’ বন্ধ। এবার যেহেতু মহামারী নেই। তাই আমাদের টিমের সাথে আলোচনায় বসলাম রমজানে কী করা যায়। আলোচনা থেকে সিদ্ধান্ত হলো অনলাইনে কুরআন তিলাওয়াত ও নাশিদের একটি প্রোগ্রাম আয়োজন করা। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রচারণা শুরু হলো। কিন্ত আশার চেয়ে অনেক বেশি সাড়া পড়ায় ফের টিমের সাথে মিটিংয়ে বসলাম। এবার সিদ্ধান্ত নিতে বসতে হলো অনেক সময়। সবশেষ সিদ্ধান্ত হলো- কুরআন তিলাওয়াত ও নাশিদ বিষয়ক ইসলামি রিয়েলিটি শো ‘রমজানের পরশ-২০২২’ নামে প্রোগ্রামটি আয়োজন হোক।

‘রমজানের পরশ’ শুরু হওয়ার বিভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়ে কাতিব টিভির সিইও বলেন, এরকম অনুষ্ঠান আয়োজনে আমিসহ আমাদের টিম ছিলো নতুন এবং সময় ছিলো কম। যার কারণে প্রোগ্রামটি মনমতো সাজানো যায়নি। অর্থনৈতিক সংকট ছিলো প্রকট। অনেক প্রতিষ্ঠানে আমরা গিয়েছিলাম, নূন্যতমও সাড়া পাইনি। কিন্তু হতাশাও হয়নি। আমাদের নিজেদের অর্থ দিয়ে ‘রমজানের পরশ’র যাত্রা শুরু হয়। তবে এরপরও দর্শক-শ্রোতা থেকে অনেক অনুপ্রেরণা পেয়েছি। আমাদের টিমে ছিলেন, জনপ্রিয় আবৃত্তি শিল্পী ও নন্দিত উপস্থাপক মীম সুফিয়ান, শাহ আনহার ইসলাম, মাহফুজুর রহমান মারুফ, মুশাহিদ আল বাহার প্রমখ। তাদেরকে অনেক ধন্যবাদ। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে উত্তম জাযা দান করুন।

আগামী বছর ‘রমজানের পরশ’র সিজন হবে কিনা বিষয়ে জানতে চাইলে কাতিব টিভির সিইও বলেন, আমাদের টিমের ইচ্ছা আছে। যদি অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও কাঙ্ক্ষিত স্পন্সর পাই, তাহলে ইনশাআল্লাহ সিজন-২ আবশ্যই হবে।

‘রমজানের পরশ’র উপস্থাপক জনপ্রিয় আবৃত্তি শিল্পী ও নন্দিত উপস্থাপক মীম সুফিয়ান বলেন, এরকম ইসলামি রিয়েলিটি শো’তে উপস্থাপক হিসেবে থাকতে পেরে নিজে গর্ববোধ করছি। কিন্ত অর্থনৈতিক সংকটের কারণে রিয়েলিটি শো’টি খুব ভালো মানে করা যায়নি। যদি সমাজের বিত্তশালী, ব্যবসায়ী, অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ব্যক্তিবর্গ এগিয়ে আসেন, আশা করি আমাদের টিম সর্বোচ্চ ভালো করার চেষ্টা করবে, ইনশাআল্লাহ।