ওমানে ভালো নেই প্রবাসী বাংলাদেশীরা

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুলাই ১৭ ২০১৯, ১৮:০৯

রেজওয়ান আহমদ সুজন, ওমান :: মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে প্রায় ৮ লাখের মতো বাংলাদেশি শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। বিদেশি শ্রমিকদের মধ্যে বাংলাদেশী শ্রমিকদের সংখ্যা এখন সবচেয়ে বেশি। কাজের জন্য বেশিরভাগ শ্রমিকের থাকতে হচ্ছে শহরের বাইরে বা কোন মরুভূমিতে। যদিও তাদের অধিকাংশেরই রুম হামরিয়া ও রুইতে।

এদিকে বাংলাদেশের বেশিরভাগ শ্রমিক ফ্রি ভিসায় পাড়ি জমাচ্ছে ওমানে। যার কারণে থাকছে না তাদের কাজের কোন নিশ্চয়তা। সারাদিন কাজ শেষে সন্ধ্যার পর নিজেদের কাজের সন্ধান করতে হচ্ছে।

ওমানের হামরিয়া ও রুইকে দ্বিতীয় বাংলাদেশ বলা হলেও এখন আর সেই আগের মতো ভিড় লক্ষ্য করা যায় না। আগে যেখানে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বিভিন্ন কোম্পানি থেকে শ্রমিক নিতে আসতেন হামরিয়া ও রুইতে। বর্তমানে কাজের তেমন সন্ধান না থাকায় প্রবাসী বাংলাদেশীরা অনেক কষ্টে জীবন-যাপন অতিবাহিত করছেন। ওমান কমিউনিটি নেতারা মনে করেন দালালদের খপ্পরে পরে অবৈধ ভিসায় মধ্যপ্রাচ্যে আসার কারণে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।

মোবেলা সানাইয়া শহরে বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে কাজ করেন ফরিদপুরের মোবারক, চার বছর আগে এলাকার এক পরিচিত লোকের মাধ্যমে তিনি ওমানে আসেন। প্রথমে মালিকের কাজ করলেও এখন অবৈধ। চুক্তি অনুযায়ী বেতন না দেওয়া এবং মাস শেষে বেতন না পাওয়ার কারণে মালিকের কোম্পানি থেকে পালিয়ে এখন অবৈধ হয়ে ৪৮ ডিগ্রি তাপমাত্রায় কঠোর পরিশ্রম করছেন। সারাদিন কাজের মধ্যে পার করলেও রাত কাটে নানা দুশ্চিন্তায়।একদিকে পরিবারের চিন্তা অপরদিকে যে কোনো সময় পুলিশের হাতে গ্রেফতারের ভয়।

প্রতি শুক্রবার সপ্তাহিক ছুটি থাকার কারণে অনেক প্রবাসীরা গ্রাম থেকে হামরিয়া ও রুইতে আসেন তাদের আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের সাথে দেখা করতে। প্রায় সময় সন্ধ্যার পর পুলিশ তল্লাশি হয় হামরিয়াতে। পুলিশ আসার খবরে বাংলাদেশি শ্রমিকরা বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে যায়। যারা পুলিশের হাতে আটক হয় তাদের বেশিরভাগ শ্রমিকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। সাময়িক সাজা ভোগের পর তাদেরকে দেশে চলে যেতে হয়। যাদের আরবাব (ওমানি স্পন্সর) ভালো, তাদের আরবাব থানায় এসে জরিমানা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।

সাধারণত মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশের তুলনায় ওমানিরা বাংলাদেশিদের বেশি সম্মান করে। সেই সাথে বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় ওমানে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীও বেশি। বর্তমানে দেশটির বাংলাদেশি শ্রমিকরা যেমন ভালো নেই, সেই সাথে যারা ব্যবসা বাণিজ্য করছেন, তাদের ব্যবসাও অনেক মন্দা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির বিশিষ্ট বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা।