এতাআতিদের ইজতেমার মূল বয়ান ও অনুবাদে মিল ছিল না

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জানুয়ারি ১৯ ২০২০, ২২:৪৫

।‌‌। আবদুল্লাহ আল ফারুক ।।

গত পরশু আমি ঘণ্টাখানেক সময় এতাআতিদের ইজতিমায় ছিলাম। ময়দানের পশ্চিম-দক্ষিণ প্রান্তে অর্থাৎ সুইচগেইটের পূবপাশের বর্ধিত অংশে বসে বয়ান শুনলাম।

অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, যিনি অনুবাদ করছেন, তিনি সম্পূর্ণরূপে মনগড়া অনুবাদ করছেন। বিদেশি মেহমান যা বলছেন, তার সিংহভাগ অংশ ছেড়ে দিচ্ছেন। কোথাও কোথাও নিজের পক্ষ থেকে বক্তব্য জুড়ে দিচ্ছেন। কোথাও তো এমন হয়েছে যে, মূল বয়ানের সঙ্গে বাংলা অনুবাদের কোনো দূরতম সম্পর্কও ছিল না।

অনুবাদের এই হতশ্রী দশা দেখে মনটা ভেঙে গেল। কারণ, তাবলীগের বয়ানগুলো হয় নিতান্তই সাদামাটা। সেই বয়ানের অনুবাদ করার জন্যে খুব বেশি যোগ্যতা লাগে না। আর উর্দু ও হিন্দি ভাষা এতোটাই সহজ যে, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষরাও তা মোটামুটি বুঝে নিতে পারে।
ইজতিমা হচ্ছে তাবলীগের সবচেয়ে বড় আয়োজন। সেই আয়োজনে যদি অনুবাদ করার মতো যোগ্য লোক এতাআতিদের কাছে না থাকে, তাহলে এই জামাত দ্বীনের ক্ষেত্রে কীভাবে অগ্রসর হবে?
ইসলাম মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রের জন্যে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়ে থাকে। একটি দ্বীনি কাফেলার কাছে যদি উপদেষ্টা হিসেবে একদল যোগ্য উলামা না থাকে তাহলে সেই কাফেলা কখনই দ্বীনের খেদমত সুষ্ঠুভাবে আঞ্জাম দিতে পারবে না।
বর্তমান পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন মাসআলা উঠে আসছে, নতুন নতুন সংকট সৃষ্টি হচ্ছে, দ্বীনের ওপর পথচলার ক্ষেত্রে বিচিত্র পরিবেশ সামনে আসছে। সেই উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্যে প্রয়োজন যোগ্য আলেমদের সুনির্দিষ্ট পথনির্দেশনা। আমি আবারও রিপিট করছি, সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্যে প্রয়োজন একদল যোগ্য আলেম। একজন নয়, দু’জন নয়, প্রয়োজন একদল যোগ্য আলেম।

চৌদ্দশ বছরের ইতিহাসে এমন কোনো দ্বীনি আন্দোলনের নজির খুঁজে পাওয়া যাবে না, যা উলামায়ে কেরামের নির্দেশনা ব্যতিরেকে মুহাম্মাদি রুটের ওপর পথ চলতে পেরেছে।
তাই প্রশ্ন জাগে, কাণ্ডারীহীন এই তরী অকূল দরিয়ায় কদ্দূর যাবে?