ইতিহাসের বৃহত্তম বাজেট উত্থাপন

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুন ০৩ ২০২১, ১৭:৪৮

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) অভিঘাত মোকাবিলায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে জাতীয় সংসদে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট উপস্থাপন শুরু করেছেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। দেশের ইতিহাসের বৃহত্তম বাজেট এটিই। বাজেটে মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি  টাকা। ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এই বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী।

এর আগে, বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভা কক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে ২০২১-২২ অর্থবছরের এই বাজেট অনুমোদন করা হয়। এরপর সেই বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের অনুমতি দিয়ে তাতে সম্মতিসূচক সই করেছেন রাষ্ট্রপতি।

এরপর বাজেট সংক্রান্ত নথিপত্র চিরাচরিত ব্রিফকেসে হাতে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এসময় অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত সংসদ সদস্যরা তাদের স্বাগত জানান।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি থেকে এখনো মুক্তি মেলেনি। অর্থনীতিতে করোনার অভিঘাতও কাটেনি। বেশকিছু গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার কারণেই অনেক মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছেন। কর্মসংস্থান হারিয়েছেন অনেকেই। বিশেষ করে সমাজের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষেরা এই করোনার অভিঘাতের সবচেয়ে বড় শিকার। দেশের সার্বিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে বিশেষত এই প্রান্তিত জনগোষ্ঠীকে গুরুত্ব দিয়েই আসছে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার তৃতীয় এই বাজেটের শিরোনাম রেখেছেন ‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’।

২০২১-২২ অর্থবছরের এই বাজেটটি দেশের ৫০তম জাতীয় বাজেট। আ হ ম মুস্তফা কামালের এটি টানা তৃতীয় বাজেট। আর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের এটি টানা ১৩তম বাজেট।

২০২১-২২ অর্থবছরে বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। এটি মোট জিডিপির ১৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে জিডিপি’র আকার ধরা হয়েছে ৩৪ লাখ ৭৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। এটি চলতি সংশোধিত বাজেটের তুলনায় নতুন বাজেটের আকার বাড়ছে প্রায় ৬৪ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা এবং  চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে ৩৫ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা বেশি।

আগামী অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। প্রথমবারের মতো জিডিপির ৬ শতাংশের বেশি ঘাটতি ধরে চূড়ান্ত করা হয়েছে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট। করোনার কারণে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার পুরোপুরি হয়নি। ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন খাত, পরিবহন ও হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায় এখনো মন্দা চলছে। যে কারণে জিডিপির প্রবৃদ্ধি খুব বেশি হবে না— এমন হিসাব থেকে আগামী বাজেটে এ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের মতো আগামী বাজেটেও  মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।