‘আর দাবায়া রাখতে পারবা না।’

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মার্চ ০৭ ২০২১, ১৪:৩১

এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের জাদুকরী ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতি অনুপ্রাণিত হয়েছিলো। এই ভাষণের মাধ্যমে মানুষ মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার দিকনির্দেশনা পেয়েছিলো।
নেতাকে হতে হয় কৌশলী, বিচক্ষণ, বুদ্ধিদীপ্ত। নেতৃত্বের প্রতিটি গুণ বঙ্গবন্ধুর মধ্যে ছিলো। ৭ ই মার্চ বঙ্গবন্ধু কৌশলে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দিবেন সেটা হয়তো স্বয়ং পশ্চিম পাকিস্তানের স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া খানও কল্পনা করতে পারেন নি।

৬৬ এর ৬ দফার মাধ্যমে শুরুতেই বঙ্গবন্ধু স্বায়ত্তশাসন তথা স্বাধিকারের দাবি করেছিলেন। তবে তখনকার রাজনীতিবিদদের অধিকাংশ বঙ্গবন্ধুর এই দাবিকে সমর্থন করেনি, এমনকি বিরোধীদলগুলোর সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু ৬ দফার প্রস্তাব উত্থাপন করলে, তা এজেন্ডায় স্থায় পায় না। কারণ রাজনীতিবিদরা মনে করছিলো ৬ দফা বাস্তবায়িত হলে পাকিস্থান ভেঙে যাবে।

তবে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার প্রতি জোরালো সমর্থন ছিলো তখনকার ছাত্রনেতাদের। ৬ দফার কারণেই বঙ্গবন্ধু পূর্বপাকিস্তানের মানুষের জাতীয়তাবাদের দাবি সুস্পষ্ট করে। সেকারণে জনগণের কাছে বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। এবং পশ্চিম পাকিস্তানের পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় ও বঙ্গবন্ধুকে নানা মামলায় একের পর এক গ্রেপ্তার শুরু হয়।

৬ দফার আন্দোলন একসময় স্বাধীনতার আন্দোলনে পরিণত হয়। তবে এই স্বাধীনতার আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে ছাত্র নেতারা। বঙ্গবন্ধুকে ছাত্রনেতারা মানতেন। লাখো জনতার উপস্থিতিতে ৭ ই মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বাঙালিরা নতুন পথে যাত্রা শুরু করে ( স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন থেকে স্বাধীন রাষ্ট্র হওয়ার আন্দোলন)। এই ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু একই সাথে যেমন বাঙালি জাতিকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, ঠিক একইভাবে পাকিস্তানের সাথে আলোচনার পথও খোলা রেখেছিলেন। এটা ছিলো বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতা। ১৮ মিনিটের জাদুকরী ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়। এই ভাষনকে কেন্দ্র করেই ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ পশ্চিম পাকিস্তানের ২৩ বছরের শোষণ, নিপীড়ন, বৈষম্য থেকে মুক্তি পায়।

বঙ্গবন্ধু মত নেতা যুগে যুগে একজনই হয়। জীবনের প্রতিটা মুহুর্তে যিনি শোষিত, নিপীড়িত মানুষের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। সেই বঙ্গবন্ধু আজকে বেঁচে থাকলে কি মেনে নিতে পারতেন যে, সামান্য লেখার জন্য মানুষকে কারাগারে জীবন দিতে হচ্ছে? আর সামান্য কার্টুন আঁকা জন্য নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে?

পাকিস্তানের শোষণ থেকে মুক্তি পেলেও শাসন ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছি কি না, তা একবার ভেবে দেখে উত্তর দিবেন।

মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন

আহবায়ক (ভারপ্রাপ্ত),

বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ