আগুনে পুড়ে ছাই হলো হাফেজ কাওসারের স্বপ্ন

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ফেব্রুয়ারি ২১ ২০১৯, ০৭:৩৯

হাফেজ মো. কাউসার আহমেদ। জীবনের শিক্ষার হাতেখড়ি মাদরাসায়। মাদরাসা লাইনে পড়াশোনা করে কোরআনের হাফেজ হয়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ভর্তি পরীক্ষায় ‘ডি’ ইউনিটে ১৭তম মেধায় সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট বিভাগে ভর্তিও হন। স্বপ্ন ছিল বড় ব্যাংকার হবে। এজন্য চতুর্থ বর্ষের শেষ সেমিস্টারে ব্যাংকের জন্য ইন্টার্নিও শেষ করেন কাউসার কিন্তু বড় ব্যাংকার হবার স্বপ্ন পুড়ে ছাই পুরান ঢাকার আগুনে।

হাফেজ মো. কাউসার আহমেদ নিজের পড়াশোনার খরচ নিজেই বহন করতেন। সেজন্য কয়েকজনের সঙ্গে শেয়ারে চুড়িহাট্টায় মদিনা মেডিকেল হল নামে ফার্মেসির ব্যবসা শুরু করেন। গতকাল বুধবার রাতে লাগা আগুনে পুড়ে যায় তার ফার্মেসি। পুড়ে মারা যায় কাউসারসহ ৬ জন।

কাউসারের ঢাবির একই বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল আলম বলেন, আমাদের মধ্যে কাউসার ছিল খবুই মেধাবী ও পরিশ্রমী। নিজের খরচ নিজেই বহন করতো। সেজন্য ফার্মেসির দোকান দিয়েছিল। ওখানে কাল আগুনে ওর স্বপ্ন পুড়ে ছাই। ওর ইচ্ছা ছিল বড় ব্যাংকার হবে, পরিবারের হাল ধরবে। ওর স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেলো। ওর মতো মেধাবীদের এমন করে পুড়ে মরা রাষ্ট্রের চরমতম ব্যর্থতা।

আগুনে পুড়ে যাবার খবর পেয়ে কুমিল্লার হোমনা থেকে ছুটে আসেন মা নুরন্নাহারসহ পরিবারের সদস্যরা।

ডেন্টাল চিকিৎসক নিজের বড় ভাই ইলিয়াস ঢামেক হাসপাতাল মর্গের সামনে বলেন, ও নিজের খরচ নিজে চালাতো। পরিবারের আমরা চার ভাই সংগ্রাম করে বড় হয়েছি। কাউসার ছিল সবার থেকে বেশি মেধাবী। ওর ব্যাংকার স্বপ্ন পুড়ে ছাই হলো আগুনে।

রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের ভবনগুলোতে লাগা ভয়াবহ আগুনে দগ্ধ এখন পর্যন্ত অন্তত ৭০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া মরদেহের মধ্যে ৪৮ পুরুষ ৫ জন নারী ও ২ জন শিশু রয়েছে।

এর আগে, বুধবার রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার থানার চুড়ি হাট্টা শাহী মসজিদের সামনে একটি বহুতল ভবনে আগুন লেগে তা আশপাশের ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট চারঘণ্টার মতো কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়। এই ঘটনায় দগ্ধসহ আহত কমপক্ষে অর্ধশত ব্যক্তিকে ইতোমধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
উৎস – অনুসন্ধানী