শোলাকিয়ায় ১৯২ তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

আগস্ট ১২ ২০১৯, ১৯:২১

জেলার ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি ছিল শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার ১৯২তম জামাত।

সোমবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে ঈদের জামাত শুরু হয়। এতে ইমামতি করেন মার্কাস মসজিদের ইমাম মাওলানা হিফজুর রহমান। নামাজ শেষে দেশের বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ও বিশ্বের মুসলিম উম্মার শান্তি কামনায় মোনাজাত করা হয়।

শোলকিয়ায় প্রতিবারই ঈদুল আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৯টায় কিন্তু মুসুল্লীদের জামাত শেষে কোরবানির সুবিধার্থে এবারই সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জামাতে অংশগ্রহণ করতে সকাল থেকেই মুসুল্লিদের ঢল নামে জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তেু নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। এ সময় কয়েক ঘণ্টার জন্য আশপাশের সব সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ধীরে ধীরে মাঠের প্রায় প্রতিটি কাতার পূর্ণ হয়ে যায়। ঈদুল ফিতরের তুলনায় ঈদুল আজহায় লোক সমাগম কম হলেও হাজার হাজার মুসুল্লীর অংশগ্রহণে সুষ্ঠুভাবে জামাত সম্পন্ন হয়।

জামাত শুরুর আগে শর্টগানের ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। জামাত শুরুর পাঁচ মিনিট আগে তিনটি, তিন মিনিট আগে দুটি, এবং এক মিনিট আগে একটি গুলি ছুড়ে জামাত শুরুর সঙ্কেত দেওয়া হয়।

ঈদ জামাতে দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিদের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। একটি ট্রেন ভোর পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে এবং অপর ট্রেন সকাল ৬টায় ভৈরব থেকে ছেড়ে বিপুল সংখ্যক মুসুল্লী নিয়ে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে।

জামাতে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, রাজনীতিকসহ সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী জানান, শোলাকিয়ায় এবারের ১৯২তম ঈদুল আজহার জামাতে খুব শান্তিপূর্ণভাবে মুসুল্লীরা নামাজ আদায় করেছেন। অতি গরমে মুসুল্লীদের যেন কষ্ট না হয়, তার জন্য প্রতিটি কাতারে পানির ব্যবস্থাও রাখা হয়েছিল। এছাড়াও মুসুল্লীদের সুষ্ঠু নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল।

পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, এবার ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। দুই প্লাটুন বিজিবি, নয় শতাধিক পুলিশ, র‌্যাব. আনসার সদস্যের সমন্বয়ে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোষাকে নজরদারি করে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।

মাঠসহ প্রবেশ পথগুলোতে ছিল সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার। এছাড়াও যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মাঠের সার্বিক ঘটনা পর্যবেক্ষণে এবং মুসল্লিদের ওপর নজরদারি করতে দুটি ড্রোন ক্যামেরাও ব্যবহার করা হয়েছে।

জনশ্রুতি আছে, কোন এক ঈদের জামাতে শোলাকিয়ায় সোয়া লাখ মুসল্লি এক সাথে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’। যা এখন শোলাকিয়া নামেই পরিচিত।