বরিশাল সিটি নির্বাচন; মুফতি ফয়জুল করীমের ১৭ দফা ইশতেহার ঘোষণা
একুশে জার্নাল ডটকম
জুন ০৮ ২০২৩, ১৬:০২
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পর এবার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম ১৭ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) বেলা ১১টায় নগরীর বান্দ রোডে সাউথ কিং চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি ১৭ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন।
১২ জুনের ভোটে নির্বাচিত হলে তিনি বরিশালকে একটি উন্নত, দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও দূষণমুক্ত শান্তির নগরী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন বলে জানান।
তার ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহারের মধ্যে রয়েছে- দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, স্বচ্ছতা আনয়ণ, জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ, নগরবিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন, নগর সরকার গঠনে কার্যকর উদ্যোগ, পানি সমস্যার সমাধান, খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রণ, ওয়ার্ডভিত্তিক পরিকল্পনা ও মাতৃসদন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ।
আরো রয়েছে- নগরীতে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের ভেজাল নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা, ভিক্ষুকদের অসহায়ত্ব দূরীকরণ, নিরাপদ বাসস্থান ও কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করা, হোল্ডিং ট্যাক্স ও সকল
ধরনের লাইসেন্স ফি সহনশীল পর্যায়ে আনা, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ সব ধরনের নাগরিক সেবা সহজ করা, স্বল্প খরচে বিল্ডিং প্লান পাশ করা, উন্নত রাস্তা-ঘাট নির্মাণ করা, নদী ভাঙন রোধে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা, শহরের সবুজায়ন ও শোভা বর্ধন করতে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা, আধুনিক মানের ড্রেন নির্মাণ ও খাল খনন করা, জলাবদ্ধতা নিরসন করা, পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথকভাবে আধুনিক মানের পাবলিক টয়লেট নিমাণ করা, ভোলা থেকে বরিশালে গ্যাস সংযোগ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা, প্রতিটি রাস্তায় সড়কবাতির ব্যবস্থা করা, আধুনিক ট্রাফিক সিগনাল বসানো,
মোড়গুলোতে আইল্যান্ড ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করবেন বলেও জানান।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম ইশতেহারে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল ও সদর হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ফ্রি মেডিক্যাল সার্ভিসের ব্যবস্থা করা, মসজিদ, মন্দির ও গির্জাভিত্তিক ধর্মীয় শিক্ষা চালু করা, বেকার জনশক্তির কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কম্পিউটার, আউটসোর্সিং ও বহুমুখী কারিগরি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করা, ডোর টু ডোর বর্জ্য সংগ্রহ, প্রতিটি এলাকায় ঢাকনাসহ ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা, প্রতিদিন
সূর্যোদয়ের পূর্বেই সকল ধরনের বর্জ্য নিরাপদ দূরত্বে নির্দিষ্ট স্থানে অপসারণ করা, নগরীর ধুলাবালি দূরীকরণ ও আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ রোধ করার কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি বরিশালকে মাদক দুর্নীতি সন্ত্রাস চাঁদাবাজ দখলদার ও সিন্ডিকেটমুক্ত নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে অঙ্গীকার করে বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে দুর্নীতি সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে সেমিনারের মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরি করা হবে, পায়েচালিত রিকশা, ভ্যান ও ঠেলাগাড়ির লাইসেন্স ফি মওকুফ করা হবে, ব্যাটারি চালিত রিকশা, ইজি-অটোবাইক এবং জ্বালানি তেল চালিত থ্রি হুইলারের জন্য সিটি কর্পোরেশন থেকে বিশেষ অনুমতিপত্র দেওয়া হবে, নারী নির্যাতন ও যৌতুক প্রথা উচ্ছেদে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে, নারী অবমাননা ও ইভটিজিং প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, মহানগরের প্রধান সড়কগুলোকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে।
এ ছাড়া কমিউনিটি পুলিশ ও নৈশ প্রহরী নিয়োগ করে নগরবাসীর নিরাপত্তা জোরদার, দেশীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্য রক্ষা ও অপসংস্কৃতির আগ্রাসন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে এবং সকল ধর্মের মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা হবে বলেও ইশতেহারে জানানো হয়।
ইশতেহার ঘোষণাকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যাযের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।